ডেস্ক রিপোর্ট : দেড় বছর বাসার বাইরের কোনো স্টুডিওতে যাননি কুমার বিশ্বজিৎ। এই সময়ের মধ্যে যে কটি গানে কণ্ঠ দিয়েছেন, সব কটিই নিজের উত্তরার বাসার স্টুডিও বসেই সেরেছেন। দেড় বছর পর ঘরের বাইরে বের হলেন। গাইলেন দুটি নতুন গান। একটি চলচ্চিত্রের, অন্যটি ঈদের গান।
কুমার বিশ্বজিতের গাওয়া গানটি দিয়েই ‘গলুই’ সিনেমার মহরত হয়ে গেল। বনানীতে বাপ্পা মজুমদারের স্টুডিওতে গানটিতে কণ্ঠ দেন কুমার বিশ্বজিৎ। শাহ আলম সরকারের লেখা এই গানের সুরকার ও সংগীত পরিচালক ইমন সাহা। ‘গলুই’ পরিচালক এস এ হক অলীকের নতুন চলচ্চিত্র। সরকারি অনুদানে নির্মীয়মাণ এই চলচ্চিত্রের প্রযোজক খোরশেদ আলম।
কথায় কথায় কুমার বিশ্বজিৎ জানালেন, এত দিন পর ঘরের বাইরে স্টুডিওতে গিয়ে কোনো গান গাইতে পেরে বেশ ভালো লাগছে। মাস দুয়েক আগে ‘চিরঞ্জীব মুজিব’ নামের একটি চলচ্চিত্রের গানে কণ্ঠ দিয়েছিলেন। যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডার স্টুডিওতে বসে গানটি রেকর্ডিংয়ের তদারকি করেন সংগীত পরিচালক ইমন সাহা।
‘গলুই’ সিনেমার গানটি প্রসঙ্গে কুমার বিশ্বজিৎ বলেন, ‘গানটায় প্রচণ্ড নাটকীয়তা আছে। এটা স্বাভাবিক কোনো গান না। ছবিটি তো নৌকাবাইচ নিয়ে, গানটির গল্পটাও এগিয়েছে নৌকাবাইচকে ঘিরে। নায়কের নৌকার পাশ দিয়ে চলে ভিলেনের নৌকা—গানে ওই বিষয়গুলো ছিল। একটু চ্যালেঞ্জিং গান। চিন্তা করলাম, বহুদিন পর একটা চ্যালেঞ্জিং গান দিয়ে নিজেকে যাচাই করি। এই ধরনের কাজ আগে আলাউদ্দিন আলী ভাই, সত্য সাহা দাদা, আলম খান ভাইয়ের গানে করতাম। ইদানীংকালের সিনেমার গল্প মানেই তো প্রেম-ভালোবাসা, সে হিসেবে এটা ভিন্ন একটা জিনিস। এই গান গাইতে গিয়ে আরেকটা বিষয় নাড়া দিয়েছে।’
কী বিষয়? ‘আগেকার গানে পরম্পরার একটা ব্যাপার ছিল। কোনো সংগীত পরিচালক গান রেকর্ড করছেন, ওই সময়টায় দেখা গেল স্টুডিওতে আরেকজন সংগীত পরিচালক ঢুকলেন। তখন স্টুডিওতে আসা সংগীত পরিচালক হয় সেই গানের কোনো আলাদা একটা ইনপুট দিতেন বা রেকর্ডিং করতেন। এটা বহু বছর ছিল না। ইমন সাহার এই গানটা গাইতে গিয়ে ঘটেছে। আমার ভয়েস রেকর্ডের সময় স্টুডিওতে ঢুকল বাপ্পা মজুমদার, এরপর ইমন বলল বাপ্পা যেন গানটির কিছু অংশ রেকর্ডিং করে দেয়। বাপ্পাও হাসিমুখে তা করে দিল। বিষয়টা আমার বেশ ভালো লেগেছে। এমন দৃশ্য বহুদিন পর দেখলাম। আগে এমনটা প্রায় হতো।’ বললেন কুমার বিশ্বজিৎ।
কুমার বিশ্বজিৎ এও বললেন, ‘কয়েক বছর আগেও গান গাওয়ার সময় ৮ থেকে ১০ জন মিউজিশিয়ান থাকত। এর বাইরেও অনেক মিউজিশিয়ান স্টুডিওতে গান রেকর্ডিং দেখতে আসত, বসত, আড্ডা দিত। মিষ্টি খাওয়া হতো। অনেক বছর তো লাইভ গান গাওয়ার ব্যাপারটা ভুলেই গিয়েছিলাম। ইমন সাহার এই গানের রেকর্ডিংয়ে অনেক মিউজিশিয়ান ছিল। দীর্ঘদিন পর এমন সুন্দর একটা একটা আবহ পেলাম। প্রযোজক, পরিচালক, সংগীত পরিচালক, শিল্পী, মিউজিশিয়ান—সবাই ছিল। গানটা রেকর্ডিংয়ের সময় আত্মিক একটা ব্যাপার ছিল। আমিও শান্তি নিয়ে গাইলাম।’
সূত্র : প্রথম আলো